সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০১:২১ পূর্বাহ্ন
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের এফ.এম নূর-উর-রফী ডক্টরস হোষ্টেলে অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।
বৃহষ্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপি হাসপাতাল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন যৌথভাবে এ অভিযান চালায়।
অভিযানে হোষ্টেলের সামনের ব্লকের তৃতীয় তলার ৩০৩ নম্বর কক্ষ থেকে রিফাতুল ইসলাম খান রন্টি নামে এক মাদক কারবরিকে ৫২০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে।
সে নগরের দক্ষিন আলেকান্দার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও একজন মাদক কারবারি। তার নামে কোতোয়ালি মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাছাড়া রন্টির স্ত্রী আসমা আক্তার রুবিনাকে সম্প্রতি বরিশাল নগরের গোরস্থান রোড এলাকা থেকে আড়াই হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করা হয়। যিনি সেই মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
বরিশাল শের ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন জানান, নিয়মিতো পরিদর্শনের অংশ হিসেবে তিনিসহ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ইন্টার্ন ডক্টরসদের জন্য বরাদ্দকৃত এ হোষ্টেলে আসেন। হোষ্টেলে এসে কিছু অসংলগ্ন বিষয় সামনে আসলে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপস্থিতিতে বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু করা হয়।
এসময় হোষ্টেলের তৃতীয় তলার ৩০৩ নম্বর কক্ষে প্রবেশের সাথে সাথে একজন যুবককে পাওয়া যায়। যে মেডিকেল কলেজ কিংবা হাসপাতালে কেউ নয়। পরে তার ওই রুমে অবস্থানের কারণ জানতে চাইলে সে কোন স্বদ উত্তরও দিতে পারেনি। পরে রুমে থানা পুলিশের সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে ৫২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ইয়াবা সেবনের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী, মদের বোতল, ছুড়িসহ বেশ কিছু সিগারেটের প্যাকেট উদ্ধার করে।
এসময় আটক যুবক হোষ্টেলের ৪০৪ নম্বর রুমে থাকা শের ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের একজন সাবেক ছাত্রের বরাত দেন। কিন্তু সে কক্ষে গিয়ে শ্রাবন নিয়ে যাকে পাওয়া যায় তিনি তাকে চেনেন। পরে সন্দেহজনক বাকি কক্ষগুলো পরিদর্শন করে অভিযানের সমাপ্তি ঘটানো হয়।
তিনি বলেন, মূলত হোষ্টেলে সাবেক ছাত্র বা বহিরাগতরা কেউ রয়েছে কিনা তা দেখভালের জন্য এ অভিযান। আর আমরা নিয়মের বাহিরে কোন কাজ করতে কাউকে দিবো না। জিড়ো ট্রলারেন্স নীতিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আমরা শতভাগ পালন করবো।
ঘটনাস্থলে থাকা কোতোয়ালি মডেল থানার এসি (সহকারী কমিশনার) মোঃ রাসেল বলেন, আটকৃত’র কাছ থেকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারের পাশাপাশি একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিয়মিতো আইনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটনের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিন) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঞা বলেন, আটককৃত যুবক একজন মাদক কারবারি, তার বিরুদ্ধে আগেও মাদক মামলা রয়েছে। তার ডক্টরস হোষ্টেলে আসার কারন ও মাদকের উৎস এবং তার সাথে আর কে কে রয়েছে সবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে। আটককৃতর কাছে ছুড়ি থাকার বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখছি।
তিনি বলেন, আমরা নগরের বিভিন্ন ছাত্রাবাসগুলোতে নজরদারী রাখছি, তারই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে হাসপাতাল প্রশাসনের উপস্থিতিতে আজকের এ অভিযান। আর মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিড়ো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছি।
এদিকে হোষ্টেলের সাধারণ নিবাসীরা জানিয়েছেন, সাবেক সিনিয়র শিক্ষার্থীদের কারনেই বহিরাগতরা এ হোষ্টেলে আসতে শুরু করে। মেডিকেল কলেজের ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর সাথে তারা এখানে আসতো এবং বিভিন্ন কক্ষে থাকতে শুরু করে। যা অব্যাহত এখনো রয়েছে। আর এরা প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ নিবাসীরা কিছুই বলতে সাহস পায়না। তাই সে সেসুযোগ এ হোষ্টেল ঘিরে মাদকের ব্যবসা গড়ে তোলে।